আদর্শ হিন্দু-হোটেল – উপন্যাস – বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়হাজারি অবাক, স্তম্ভিত। চক্ষুকে বিশ্বাস করা শক্ত। এ কি হইয়া গেল! পদ্মদিদি তাহার পায়ের উপর উপুড় হইয়া পড়িয়া পায়ের ধূলা লইতেছে! এমন একটা দৃশ্য কল্পনা করিবার দুঃসাহসও কখনো তাহার হয় নাই। কোন সৌভাগ্যটা বাকী রহিল তাহার জীবনে?
স্টেশনে তুলিয়া দিতে আসিল দুই হোটেলের কর্মচারীরা প্রায় সকলে–তা ছাড়া অতসী, টেঁপি, নরেন। বাহিরের লোকের মধ্যে যদু বাঁড়ুয্যে। যদু বাঁড়ুয্যে সত্যই আজকাল হাজারিকে যথেষ্ট মানিয়া চলে। তাহার ধারণা হোটেলের কাজে হাজারি এখনও অনেক বেশী উন্নতি দেখাইবে, এই তো সবে শুরু।
অতসী পায়ের ধূলা লইয়া বলিল–আসবেন কিন্তু পুজোর সময় কাকাবাবু, মেয়ের বাড়ীর নেমন্তন্ন বইল। ঠিক আসবেন–
টেঁপি চোখ মুছিতে মুছিতে বলিল–খাবারের পুঁটুলিটা ওপরের তাক থেকে নামিয়ে কাছে রাখো বাবা, নামাতে ভুলে যাবে, তোমার তো হুঁশ থাকে না কিছু। আর রাত্তিরেই খেও, ভুলো না যেন। কাল বাসি হয়ে যাবে, পথেঘাটে বাসি খাবার খবরদার খাবে না। মনে থাকবে? তোমার চিঠি পেলে মা বলেচে রাধাবল্লভতলায় পুজো দেবে
চলন্ত ট্রেনের জানালার ধারে বসিয়া হাজারির কেবলই মনে হইতেছিল পদ্মদিদি যে আজ তাহার পায়ের ধূলা লইয়া প্রণাম করিল এ সৌভাগ্য হাজারির সকল সৌভাগ্যকে ছাপাইয়া ছাড়াইয়া গিয়াছে।
সেই পদ্মদিদি!
ঠাকুর রাধাবল্লভ, জাগ্রত দেবতা তুমি, কোটি কোটি প্রণাম তোমার চরণে। তুমিই আছ। আর কেহ নাই। থাকিলেও জানি না।
অসাধারণ একটা বই! অনেক কিছু শেখার আছে এই বই থেকে।
অনেকেই বইটা পড়েছেন, আপনাদের কেমন লেগছে জানাতে পারেন।
আর যারা এখনো পড়েন নাই তারা পড়ে ফেলতে পারেন ভালো লাগবে।